সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ আফগানিস্তান, ইরাক, বাংলাদেশ


বই : সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ আফগানিস্তান, ইরাক, বাংলাদেশ
আইএসবিএন নং : ৯৭৮-৯৮৪-৩৪-০৫৬১-৬
প্রকাশ কাল : জুন ২০১৬
মূল্য : ২৫০
বইয়ের ধরন : প্রবন্ধ
লেখক :  আনু মুহাম্মদ
বই সংক্ষেপ :  

‘ওয়ার অন টেরর’ বা ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা পরিচালনার প্রধান মন্ত্রে পরিণত হয়েছে। এই মন্ত্র প্রথম উচ্চারিত হয়েছিলো ২০০১ সালে সাম্রাজ্যবাদী কেন্দ্র রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবাজ প্রেসিডেন্টের মুখে, টুইন টাওয়ারসহ কয়েকটি স্থাপনার ওপর হামলার পর। তবে এর প্রস্তুতি কয়েকবছর থেকেই চলছিলো। হামলার পর থেকে এই মন্ত্রের ভিত্তিতে বিশ্ব পুঁজিবাদী ব্যবস্থা অধিকতর সামরিকীকৃত হয়েছে, বিশ্বের সবচাইতে বড় সন্ত্রাসী রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালনায় এই যুদ্ধে শরিক হয়েছে বিশ্বের প্রায় সকল দেশ। বাংলাদেশ সরকারও তার সক্রিয় অংশীদার। সারাবিশ্ব এখন অধিকতর নিরাপত্তাহীন, সন্ত্রস্ত।  
কারা এই সন্ত্রাস পরিচালনা করছে? কারা এই সন্ত্রাসীদের তৈরি করেছে? এই সন্ত্রাস কাদের বিশ্বজোড়া দখল লুন্ঠনে সহযোগিতা করছে? কেন এবং কীভাবে এই ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ বিশ্বকে আরও যুদ্ধ-সন্ত্রাস-দখল-লুন্ঠনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে? তৈরি করা অনেক মায়াবী আচ্ছাদন সরিয়ে প্রকৃত অবস্থা বোঝার জন্য এসব প্রশ্ন অনুসন্ধানের দিকে আমাদের যেতেই হবে। বর্তমান গ্রন্থভুক্ত তিনটি প্রবন্ধে সেই চেষ্টাই করা হয়েছে।
প্রথম প্রবন্ধে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন-জাতিসংঘের সামরিক হামলার প্রেক্ষাপট এবং তার পরবর্তী বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হয়েছে। আফগানিস্তানের ইতিহাস, সমাজ, জাতিগত সংঘাত, ভৌগোলিক কৌশলগত অবস্থান, সম্পদ ও দারিদ্র, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের ধারাবাহিকতা ইত্যাদি এই পর্যালোচনার অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয় প্রবন্ধটি ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলা, দখল এবং দখল-পরবর্তী রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বিন্যাস নিয়ে লিখিত। এই প্রবন্ধে ইরাককে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করবার পেছনে সম্পদ, কৌশলগত গুরুত্ব, মধ্যপ্রাচ্যে সাম্রাজ্যবাদ, ইসরাইল ও রাজতন্ত্রের জোটের ভূমিকা পর্যালোচনা করা হয়েছে। তৃতীয় প্রবন্ধে বাংলাদেশকে কেন্দ্রে রেখে বৈশ্বিক পর্যায়ে মৌলবাদ, ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সাথে সাম্রাজ্যবাদের মেলবন্ধন বিশ্লেষণের পাশাপাশি অনেকগুলো প্রচলিত প্রচারণা ও বিশ^াস খ-ন করে রাজনীতি, ধর্ম, শ্রেণি পর্যালোচনার চেষ্টা করা হয়েছে। জনবৈরী বিদ্যমান রাজনীতি এবং বহিস্থ বৈশ্বিক ফ্যাসিবাদী রাজনীতি কীভাবে বাংলাদেশকে আরও বিপদগ্রস্ত করছে সেটিও আলোচনায় আনা হয়েছে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত প্রায় সবদেশের মানুষ ক্রমবিস্তারমান সামরিকীকৃত বৈশি^ক ফ্যাসিবাদী শাসনে বন্দি। চিরস্থায়ী সন্ত্রাস এবং আতঙ্কের পাশাপাশি সর্বজনের জীবন এবং সম্পদ পুঁজির আগ্রাসী থাবার নীচে। এর থেকে মুক্তির লড়াই দেশে দেশে, তবে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংহতির গুরুত্ব এখন অনেক বেশি। তবে এর জন্য বর্তমান বিশ্ব (অ)ব্যবস্থার মতাদর্শিক আধিপত্য ও অবিরাম প্রচারণার আচ্ছন্নতা থেকে মুক্তি অপরিহার্য।